পাথরটি একটি বৃত্তাকার ধ্বংসাবশেষ মঞ্চের কেন্দ্রে স্থাপন করা ছিল, যা এর আচারিক (ritualistic) ব্যবহারের একটি শক্তিশালী ইঙ্গিত দেয়। পাথরটির উপর রয়েছে ঘনীভূত ত্রিভুজীয় স্তর এবং এটি হলুদ বর্ণের রঞ্জক দ্বারা অলংকৃত ছিল। এর ত্রিভুজাকৃতি, যা ১১,০০০ বছরের পুরনো বলে ধারণা করা হয় (কিছু মত অনুসারে প্রায় ৯,০০০ বছর), অনেকেই কালী যন্ত্রের প্রতিরূপ হিসেবে দেখেন — যা একটি প্রাচীন দেবীস্বরূপ প্রতীক।
বাঘোর পাথরের আবিষ্কার অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এটিকে উপমহাদেশে মাতৃদেবী উপাসনার অন্যতম প্রাচীন নিদর্শন হিসেবে ধরা হয়, যা অন্যান্য পরিচিত কাঠামোগুলোর চেয়েও বহু সহস্রাব্দ পুরনো হতে পারে। যেখানে এটি আবিষ্কৃত হয়েছে, সেই স্থানটিতে এখনো স্থানীয় আদিবাসী জনগোষ্ঠী যেমন কল ও বৈগা সম্প্রদায় পূজা করে থাকে। তাদের মধ্যে বাঘোর যন্ত্রের মতো পাথরের পূজার একটি দীর্ঘকালীন ঐতিহ্য রয়েছে।
এই ধর্মীয় বিশ্বাসের অসাধারণ ধারাবাহিকতা — যা শিকারি-সংগ্রাহক যুগ থেকে চলে আসছে — ভারতের দেবী-উপাসনা ও তন্ত্রচর্চার গভীর শিকড়কে তুলে ধরে। এই পাথরটি প্রাগৈতিহাসিক অতীত এবং বর্তমান জীবন্ত ঐতিহ্যের মধ্যে একটি দৃশ্যমান সংযোগ হিসেবে কাজ করে, যা মানুষের সাথে দিব্য নারী শক্তির চিরন্তন আধ্যাত্মিক সম্পর্কের সাক্ষ্য বহন করে।
আমি বাঘোরের এই যন্ত্র সম্পর্কে পড়তে আগ্রহী হই বিবেক দেবরায়ের ‘দেবী’ বইয়ের একটি অংশ পড়ে, যেখানে প্রারম্ভিক বৈদিক যুগের আগেও যন্ত্র এবং তিন-মাত্রিক বস্তু আচার-অনুষ্ঠানে ব্যবহারের উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রত্যুষ চৌধুরী
No comments:
Post a Comment